হাইমচরে ফসলি জমিতে স্টেডিয়ামের প্রস্তাবনা, কৃষকদের অসন্তোষ

 

শরীফ মোঃ মাছুম বিল্লাহ

হাইমচর উপজেলাধীন ২নং আলগী দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত উত্তর আলগী মৌজায় প্রান্তিক কৃষকদের একমাত্র সম্বল কৃষি জমিতে নির্মিত হতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল স্টেডিয়াম। এ স্টেডিয়ামের জন্য প্রায় সাড়ে ৩.১৯০০ একর ভূমি প্রস্তাব করা হয়েছে। স্টেডিয়াম নির্মিত হলে পাশের জমিসহ প্রায় ৫ একর কৃষি জমি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

বাংলাদেশ একটি কৃষি নির্ভর দেশ। বর্তমানে প্রায় ৭৫% মানুষ কৃষির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। তারমধ্যে কৃষি হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের একমাত্র উপার্জনের হাতিয়ার।

প্রস্তাবিত শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের জন্য কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হলে কৃষকরা ভূমিহীন হয়ে যাবে৷ প্রস্তাবিত কৃষি জমিতে কৃষকরা বছরে তিন ফসল চাষ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। তাছাড়া ধান, গম, ভুট্টা, পানের বরজ, পাট, ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করেন। এ ভূমি থেকেই গবাদি পশুর জন্য খড় ও ঘাসের ব্যবস্থা করেন।

ভূমিহীন কৃষকরা জমি বর্গা এবং ইজারা নিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকেই যৌথ পরিবারে বসবাস করে। ফলে ঘরবাড়ি তৈরির জন্য উক্ত ভূমি ব্যবহার করতে হবে। অত্র উপজেলার অধিকাংশ জমি নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে এবং ২নং উত্তর আলগী ইউনিয়ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় মানুষের জীবন যাপনের উপর ব্যাপক প্রতিকূল প্রভাব পড়বে। এছাড়া এখানে স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে আশেপাশের কৃষি জমি বন্যায় প্লাবিত হবে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কৃষি জমিতে প্রকল্প করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কুচক্রী মহল তাদের উদর পুর্তির জন্য ‘এই জমিতে কোনও ফসলাদি চাষাবাদ হয় না’ এই মর্মে কৃষি জমিকে প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

তাই কৃষকের জীবন ও জীবিকার বিষয় বিবেচনা করে স্টেডিয়ামের জন্য বিকল্প ভূমির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর আবেদন জানান কৃষকরা। উল্লেখ্য, অত্র ইউনিয়নের লামছড়ি এবং ৩নং দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নাধীন চরভাঙ্গাসহ একাধিক মৌজায় স্টেডিয়াম করার মতো ভূমি রয়েছে, যাতে আপত্তি থাকার মত নয়।

ক্যাপশন : প্রস্তাবিত স্টেডিয়ামের যায়গায় চাষ করা পাকা ধান কাটছেন কৃষক।

Related posts

Leave a Comment